মাজরা পোকা
১। মাজরা পোকার কীড়াগুলো কাণ্ডের ভেতরে থেকে খাওয়া শুরু করে এবং ধীরে ধীরে গাছের ডিগ পাতার গোড়া খেয়ে কেটে ফেলে। ফলে ডিগ পাতা মারা যায়। একে ‘মরা ডিগ’ বা ‘ডেডহার্ট ’ বলে। ২। ক্ষতিগ্রস্ত গাছের কাণ্ডে মাজরা পোকা খাওয়ার দরুণ ছিদ্র এবং খাওয়ার জায়গায় পোকার মল দেখতে পাওয়া যায়। ৩। মাজরা পোকার কীড়াগুলো ডিম থেকে ফুটে বের হবার পর আস্তে আস্তে কাণ্ডের ভেতরে প্রবেশ করে। ৪। কীড়ার প্রথমাবস্থায় এক একটি ধানের গুছির মধ্যে অনেকগুলো করে গোলাপী ও কালোমাথা মাজরার কীড়া জড়ো হতে দেখা যায়। কিন্তু হলুদ মাজরা পোকার কীড়া ও পুত্তলীগুলো কাণ্ডের মধ্যে যে কোন জায়গায় পাওয়া যেতে পারে। ৫। আলোর চার পাশে যদি প্রচুর মাজরা পোকার মথ দেখতে পাওয়া যায় তাহলে বুঝতে হবে ক্ষেতের মধ্যে মথগুলো ডিম পাড়া শুরু করেছে।
১। নিয়মিতভাবে ক্ষেত পর্যবেক্ষণের সময় মাজরা পোকার মথ ও ডিম সংগ্রহ করে নষ্ট করে ফেললে মাজরা পোকার সংখ্যা ও ক্ষতি অনেক কমে যায়। থোর আসার পূর্ব পর্যন্ত হাতজাল দিয়ে মথ ধরে ধ্বংস করা যায়। ২। ক্ষেতের মধ্যে ডালপালা পুঁতে পোকা খেকো পাখির বসার সুযোগ করে দিলে এরা পূর্ণবয়স্ক মথ খেয়ে এদের সংখ্যা কমিয়ে ফেলে। ৩। মাজরা পোকার পূর্ণ বয়স্ক মথের প্রাদুর্ভাব যখন বেড়ে যায় তখন ধান ক্ষেত থেকে ২০০-৩০০ মিটার দূরে আলোক ফাঁদ বসিয়ে মাজরা পোকার মথ সংগ্রহ করে মেরে ফেলা যায়। ৪। ধানের জমিতে ১০০ টির মধ্যে ১০-১৫ টি মরা কুশি অথবা ৫ টি মরা শীষ পাওয়া গেলে অনুমোদিত কীটনাশক যেমন: ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি ৭৫ গ্রাম/হেক্টর হারে অথবা কার্বোফুরান গ্রুপের কীটনাশক যেমন: ফুরাডান ৫ জি ১০ কেজি/হেক্টর হারে বা ব্রিফার ৫জি ১০ কেজি/হেক্টর হারে অথবা ডায়াজিনন গ্রুপের কীটনাশক যেমন: সার্বিয়ন ৬০ ইসি ৩.৪ মিলি./ লি: অথবা ফিপ্রোনিল গ্রুপের কীটনাশক যেমন: গুলী ১মিলি/লি: হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা বা রিজেন্ট ৩ জিআর ১০ কেজি/হেক্টর হারে প্রয়োগ করা। অথবা অন্য নামের অনুমোদিত কীটনাশক অনুমোদিত মাত্রায় প্রয়োগ করা । দানাদার কীটনাশক প্রয়োগের সময় জমিতে অবশ্যই পানি থাকা চাই ।
১. জমিতে অতিরিক্ত ইউরিয়া সার বা এলোপাথারি বালাইনাশক ব্যবহার করবেন না।
১. সঠিক দূরত্বে ও সঠিক বয়সের চারা রোপণ করুন । ২.চারা লাগানোর পরপরই জমিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে খুঁটি পুতে দিন যাতে সেখানে পাখি বসে পোকা খেতে পারে। ৩. মাটি পরীক্ষা করে জমিতে সুষম সার দিন।